অস্ত্রোপচারে বা সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের পর নতুন মায়েদের অনেক সময় তীব্র মাথাব্যথা হয়। স্পাইনাল অ্যানেসথেশিয়া বা মেরুদণ্ডে সুই ফুটিয়ে চেতনানাশক ইনজেকশন দেওয়ার কারণে এমনটা হয়।
অতীতে নিম্নাঙ্গ অবশ করতে মোটা সুই ব্যবহার করা হতো। এ কারণে সে সময় প্রায় ৬৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই তীব্র মাথাব্যথা হতো। কিন্তু এখন আধুনিক ও সূক্ষ্ম সুই ব্যবহার করা হয়। এ কারণে মাথাব্যথার হার ১১ শতাংশে নেমে এসেছে।
মেরুদণ্ডের ভেতর স্পাইনাল কর্ড বা মেরুরজ্জুর আবরণী ডুরাম্যাটারে অপেক্ষাকৃত বড় ছিদ্র হয়ে যাওয়াই এই মাথাব্যথার মূল কারণ। সুইয়ের আকার–আকৃতি ছাড়াও আরও কিছু বিষয় এর সঙ্গে জড়িত। কয়েকবারের চেষ্টায় সুই ফোটানো, পানিশূন্যতা, কম ওজন বা আগে মাথাব্যথার ইতিহাস এর মধ্যে অন্যতম। এই মাথাব্যথা সাধারণত অস্ত্রোপচারের প্রথম বা দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয়, সাত দিনের কম স্থায়ী হয়। তবে খুবই কম ক্ষেত্রে ১৪ দিন পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে। মাথাব্যথার তীব্রতা যদি এমন হয় যে মায়ের স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে বা নবজাতককে দুধ দিতে বা যত্ন নিতে সমস্যা হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মেরুদণ্ডে সুই ফুটিয়ে চেতনানাশক ইনজেকশন দেওয়ার কারণে সিজারিয়ান অপারেশনের পর নতুন মায়েদের অনেক সময় তীব্র মাথাব্যথা হয়।
এই ব্যথা মাথার সামনে ও পেছনের দিকে হয়, ঘাড় শক্ত হয়ে থাকে। কখনো ব্যথা দুই কানের ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, চোখের পেছনেও অনুভূত হয়। বসা বা দাঁড়ানো অবস্থায় বাড়ে, শুয়ে থাকলে কিছুটা প্রশমিত হয়। মাথাব্যথার সঙ্গে মাথা ঘোরা, বমি ভাব, শ্রবণশক্তি কমে যেতে পারে।
স্পাইনাল অ্যানেসথেশিয়ার পর তীব্র মাথাব্যথা শুরু হলে একজন অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞ বা অবেদনবিদ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অস্ত্রোপচারের পর প্রচুর পানি পান করতে হবে। যথেষ্ট পানি পান করতে না পারলে বা বমি ভাব থাকলে শিরায় স্যালাইন দিতে হবে। আরামদায়ক অবস্থানে শুতে হবে। অস্ত্রোপচারের পর বেশি শুয়ে থাকলে আবার পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা থাকে। তাই বিশেষ মোজা পরতে হতে পারে। কফি পান করলে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল সেবন করা যাবে। যদি ব্যথানাশক, পানি বা স্যালাইন খাওয়ার কিংবা বিশ্রাম নেওয়ার পরও তীব্র মাথাব্যথা থাকে, তাহলে অ্যানেসথেশিয়া বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সূত্রঃ প্রথমআলো