দীর্ঘদিনের কাশি কি ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ? জেনে নিন সতর্কতার সংকেত

kashi

সর্দি-কাশি, ঠাণ্ডা লাগা—এগুলো নিয়ে আমরা প্রায়ই মাথা ঘামাই না। কিন্তু কাশি যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে না সারে, তখনই সতর্ক হওয়া উচিত। চিকিৎসকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি কাশি অনেক সময় ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে।

সাধারণ কাশি আর ক্যান্সারের কাশির পার্থক্য

কাশি সাধারণত সর্দি, গরম-ঠাণ্ডা পরিবর্তন বা অ্যালার্জির কারণে হয়ে থাকে। কখনো সংক্রমণ বা লিভারের সমস্যার ফলেও কাশি দেখা দেয়। কিন্তু যদি কাশির সঙ্গে বুকে, কাঁধে বা পিঠে ব্যথা অনুভূত হয়, তাহলে এটি সাধারণ কাশি নয়—এটি গভীর কোনো শারীরিক সমস্যার সংকেত হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ‘ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ হলো দীর্ঘদিন ধরে থাকা কাশি, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট।’

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে, কাশি ও বুকে ব্যথা একসঙ্গে দেখা দিলে তা ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ের ইঙ্গিত হতে পারে।

যেসব লক্ষণে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যাবেন

  • কাশি ৩ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়
  • সময়ের সঙ্গে কাশি আরো বেড়ে যায়
  • কাশির সঙ্গে রক্ত বা মরচে রঙের থুতু আসে
  • জোরে হাসলে বা শ্বাস নিলে দম ফুরিয়ে যায়
  • বারবার ফুসফুসের সংক্রমণ হয়
  • হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা অজানা ক্লান্তি

এ ছাড়া যদি কাশির সঙ্গে কাঁধ, পিঠ বা হাতে ব্যথা অনুভব করেন, বিশেষ করে রাতের দিকে ব্যথা বাড়ে বা হাতে ঝিনঝিনানি হয়, তবে সেটিও ফুসফুসের ওপরের অংশে থাকা টিউমারের লক্ষণ হতে পারে, এমনটাই জানিয়েছে ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক।

ক্যান্সারের কাশি চিনবেন কিভাবে

অ্যালার্জি বা ভাইরাসজনিত কাশি সাধারণত ৭–১০ দিনের মধ্যে কমে যায়। কিন্তু যদি কাশি ৩ সপ্তাহ বা তার বেশি স্থায়ী হয়, ওষুধে না কমে এবং সঙ্গে রক্ত আসে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে এটি ক্যান্সারজনিত কাশি হতে পারে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ, এমন কাশি হলে বিলম্ব না করে ফুসফুস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং প্রয়োজনে এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান করা দরকার। সব দীর্ঘমেয়াদি কাশি ক্যান্সারের লক্ষণ নয়, তবে ক্যান্সার হতে পারে। তাই কাশি যদি ৩ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, উপসর্গগুলো হালকা মনে করেও অবহেলা করবেন না। সময়মতো পরীক্ষা করান। কারণ ফুসফুস ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেক সহজ ও কার্যকর হয়।