Blog

  • অ্যাংজাইটি অ্যাটাকের কারণ হতে পারে অতিরিক্ত মানসিক চাপ, করণীয় কী?

    অ্যাংজাইটি অ্যাটাকের কারণ হতে পারে অতিরিক্ত মানসিক চাপ, করণীয় কী?

    আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নতুন ঘটনা, অনিশ্চয়তা ও চাপ বাড়ছে। কাছের কেউ অসুস্থ হলে কী করতে হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়। এর সঙ্গে পড়ালেখা, সংসার, অফিস, আর্থিক চাপ—সব মিলিয়ে মানসিক ক্লান্তি আমাদের অনেকের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে। অনেকেই ভাবছেন, এত কিছু সামলানোর পরও চাকরি বা আয়ের নিরাপত্তা থাকবে তো? এই অনিশ্চয়তা থেকেই বাড়ছে মানসিক চাপ।

    তবুও মনে রাখতে হবে—এমন পরিস্থিতি চিরদিন থাকবে না। কঠিন সময় একসময় কেটে যায়। কিন্তু তত দিন নিজেকে শান্ত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে মানসিক চাপ, ভয় এবং অ্যাংজাইটি অ্যাটাকের ঘটনা আগের তুলনায় অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।

    উদ্বেগ বেড়ে গেলে শরীরে কিছু শারীরিক লক্ষণও দেখা দিতে পারে—শ্বাস দ্রুত হওয়া, বুক ধড়ফড়, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া। এগুলো সিম্প্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম সক্রিয় হয়ে যাওয়ার কারণে হয়। শরীরে কোনো সমস্যা নাও থাকতে পারে, কিন্তু তবু মনে হবে দম নিতে কষ্ট হচ্ছে।

    অস্থিরতা, ভয় ও দুশ্চিন্তা এসব অনুভূতি স্বাভাবিক।

    কিন্তু অতিরিক্ত উদ্বেগ কোনো সমস্যার সমাধান নয়, বরং তা আরো স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। তাই নিজেকে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি।

    এ ধরনের পরিস্থিতিতে—
    মেডিটেশন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন।
    যাকে বিশ্বাস করেন, তার সঙ্গে কথা বলুন।
    নিয়মিত ব্যায়াম করুন।

    নিজের পছন্দের কাজ বা শখে কিছু সময় দিন।

    যদি বারবার এমন উদ্বেগ দেখা দেয় বা দৈনন্দিন জীবনে বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে মনোবিদ বা কাউন্সিলরের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো। এখন অনলাইন সেশন সহজলভ্য হওয়ায় সহায়তা পাওয়া আরো সহজ হয়েছে।

  • উপসর্গ দেখার আগেই শনাক্ত করা যাবে কোলন ক্যান্সার, কিভাবে সতর্ক হবেন

    উপসর্গ দেখার আগেই শনাক্ত করা যাবে কোলন ক্যান্সার, কিভাবে সতর্ক হবেন

    আমরা প্রতিদিন যা খাই, সেই খাবারের পুষ্টিগুণ রক্তে মিশে যাওয়ার পর অবশিষ্টাংশ জমা হয় কোলনে। আর সেখানেই যদি কোষ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

    সারা বিশ্বে যেসব ক্যান্সারের দাপট সবচেয়ে বেশি, সেগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে কোলন ক্যান্সার। আমাদের দেশেও খুব একটা পিছিয়ে নেই এই রোগ।

    ক্রমাগত বেড়েই চলছে এই রোগের প্রকোপ। অনেক সময়েই দেরিতে উপসর্গ দেখা দেয় বলে চিকিৎসার সময় পাওয়া যায় না। কিন্তু এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় দেখাচ্ছেন ক্যান্সার চিকিৎসকরা।

    চিকিৎসকদের মতে, উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে কোলন ক্যান্সার শনাক্ত করা সম্ভব।

    তার জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের প্রয়োজন। একাধিক ক্যান্সারের মতো কোলন ক্যান্সারের জন্যও স্ক্রিনিং হয়। আর যাদের উপসর্গ নেই, তাদের পরীক্ষা করে দেখা হয়, শরীরে কোলন ক্যান্সারের প্রকোপ শুরু হয়েছে কি না।

    যাদের কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ নেই, তাদের শরীরেই স্ক্রিনিংয়ের পরীক্ষাগুলো করা হয়।

    কোলন ক্যান্সারের জন্যও তাই স্ক্রিনিং করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। এগুলো রোগের সম্ভাব্য লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

    যদি স্ক্রিনিংয়ে উদ্বেগজনক কিছু চোখে পড়ে, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ সুপারিশ করবেন চিকিৎসক। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য হাল আরো বিস্তারিত জানতে আরো কয়েকটি পরীক্ষার প্রয়োজন পড়তে পারে।

    মলের দুইটি পরীক্ষা করে স্ক্রিনিং হয় বলে জানালেন চিকিৎসকরা।

    স্টুল ফর অকাল্ট ব্লাড টেস্ট : মল দিয়ে রক্তপাত হচ্ছে কি না, সেটি পরীক্ষা করা হয়। খালিচোখে নজরে না না আসার ঝুঁকি থাকে বলে মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষা হয়। বছরে একবার পরীক্ষা করালেই হয়।

    স্টুল ফর ফিকাল ডিএনএ টেস্ট : শরীরের ভেতরে ক্যান্সার থাকলে অস্বাভাবিক ডিএনএ তৈরি হয়। সেগুলো মলের সঙ্গে বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মল পরীক্ষা করে দেখা হয়, অস্বাভাবিক ডিএনএ আছে কি না। তিন বছর অন্তর অন্তর এই পরীক্ষা করানো হয়।

    এই দুইটি পরীক্ষা ছাড়াও কোলোনোস্কোপি করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। দশ বছরে একবার এই পরীক্ষা করালেই হয়।

    ক্যান্সার চিকিৎসক কখন শুরু করা উচিত

    চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সাধারণত ৪৫ বছর বয়স থেকে কোলন ক্যান্সারের স্ক্রিনিং শুরু করা উচিত। তবে যাদের বংশে ক্যান্সারের ইতিহাস রয়েছে, বা জেনেটিক পরীক্ষার মাধ্যমে যাদের অস্বাভাবিক জিন শনাক্ত হয়েছে, তাদের আরো কম বয়স থেকেই শুরু করা উচিত।

    প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের নিরাময় সম্ভব। কিন্তু একবার ক্যান্সার কোলনের বাইরে ছড়িয়ে পড়লে, তার চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই কারণে ৪৫ বছর বয়স থেকেই নিয়মিত কোলোরেক্টাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন।

  • শীতে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য সতর্কতার পরামর্শ

    শীতে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য সতর্কতার পরামর্শ

    এ দেশে শীতের সঙ্গে অসুখের সম্পর্ক নতুন নয়। শীতকালেই নানা রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের রোগীদের জন্য শীত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। ঠাণ্ডা তাপমাত্রার কারণে শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তনালি, শিরা ও ধমনী সংকুচিত হয়।

    ফলে রক্ত সঞ্চালনের জন্য রক্তনালিকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। বয়স পঞ্চাশের পর এই সমস্যা আরো সাধারণ। চলুন, জেনে নিই শীতকালে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়।

    রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করুন
    বাড়িতে রক্তচাপ মাপার যন্ত্র রাখুন এবং সপ্তাহে ৩-৪ দিন মাপুন।

    যাদের ক্রনিক হাইপারটেনশন, শীতকালে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের মাত্রা সমন্বয় করুন।

    উষ্ণ পোশাক পরুন
    বাইরে বের হলে গরম ও আরামদায়ক পোশাক ব্যবহার করুন। শীতকালীন সোয়েটার, টুপি, মোজা ইত্যাদি অবশ্যম্ভাবী।

    রুটিন বজায় রাখুন
    নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের নিয়ম মেনে চলুন।

    লবণ ও ফাস্ট ফুড কমান
    শীতে অতিরিক্ত নোনতা খাবার, স্ন্যাক্স বা ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।

    স্বাস্থ্যকর খাবার খান
    শীতকালীন শাকসবজি, ফল, স্বাস্থ্যকর খাবার, বাদাম, প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন মাছ, মুরগি, সয়াবিন, ডাল রাখুন।

    অ্যালকোহল সীমিত করুন
    শীতকালে পার্টি ও পিকনিকের সময় অ্যালকোহল বেশি গ্রহণ করবেন না, কারণ এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ উষ্ণতা হঠাৎ কমিয়ে দিতে পারে এবং রক্তনালীর সংকোচন ঘটাতে পারে।

    শীতকালে এই সতর্কতা মেনে চললে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়।

  • যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন টাইপ-২ ডায়াবেটিস

    যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন টাইপ-২ ডায়াবেটিস

    টাইপ-২ ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা, যেখানে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। তবে সঠিক জীবনধারা, খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও প্রয়োজনে ওষুধ বা ইনসুলিনের সাহায্যে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। চলুম, জেনে নিই কিভাবে প্রতিদিনের ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।

    খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন
    বেশি করে শস্য, শাকসবজি, ফলমূল, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (যেমন জলপাই তেল),
    চিনিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনিযুক্ত পানীয় ও জুসের বদলে পানি বা কম ক্যালরির পানীয় পান,
    স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

    ব্যায়াম
    সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম (যেমন দ্রুত হাঁটা) করুন। এটি সপ্তাহে ৫ দিন × ৩০ মিনিটও করা যায়। হাঁটা, হাইকিং, খেলাধুলা বা অন্য শারীরিক কার্যকলাপ করুন। সপ্তাহে দুই দিন প্রতিরোধমূলক ব্যায়াম করুন (যেমন পুশ-আপ, ওজন তোলা, ফিটনেস মেশিন)।

    হঠাৎ বেশি ব্যায়াম বা ক্যালরি কমানো রক্তে শর্করা বিপজ্জনকভাবে কমাতে পারে। ধীরে ধীরে করুন।

    ওষুধ
    টাইপ-২ ডায়াবেটিসে সাধারণত মেটফর্মিন (গ্লুকোফেজ) দেওয়া হয়। এটি লিভারকে কম গ্লুকোজ উৎপাদনে সাহায্য করে এবং শরীরকে ইনসুলিন ভালোভাবে কাজে লাগাতে সাহায্য করে।

    যদি শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না করে বা সঠিকভাবে ব্যবহার না করতে পারে, তাহলে ইনসুলিন প্রয়োজন হতে পারে। ইনজেকশন কলম, পাম্প, ইনহেলার বা জেট ইনজেক্টর দিয়ে ইনসুলিন নেওয়া যায়।

    সতর্কতা
    বেশি ইনসুলিন নিলে বা খাবার কম খেলে রক্তে শর্করা কমে যেতে পারে। কম শর্করার লক্ষণ: ঘাম, ঝাঁকুনি, মাথা ঘোরা, ক্ষুধা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, বিরক্তি বা উদ্বেগ।

    চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ
    ওষুধের প্রতিক্রিয়া প্রত্যেকের জন্য ভিন্ন।

    ডাক্তার সঙ্গে নিয়মিত পরামর্শ করুন।
    রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
    নিয়মিত ডাক্তারের চেকআপ করুন।
    চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন

    ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং ধ্যান সাহায্য করবে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও ঔষধ বাড়িতে রাখুন। চোখ, পা ও ত্বকের দিকে নজর রাখুন।উদ্বেগ, চাপ বা বিষণ্ণতা হলে সাহায্য নিন।

    সূত্র : বিবিসি